Tuesday, July 13, 2021

লক্ষী পূজা

"।শ্রীশ্রী লক্ষ্মী পূজার পদ্ধতি।"
*****--*****--#--*****--*****
>  বৃহস্পতিবার এলেই সনাতনীদের বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয়ে যায় একটা উৎসবের আমেজ। আজ যে লক্ষ্মীপূজা। কিন্তু যারা আজ প্রথম বার লক্ষ্মীর ঘট পাতছেন, তারা কি পূজার নিয়মবিধি সঠিক ভাবে জানে! মা লক্ষ্মীদেবীর পূজা প্রতিমা, ঘট, পট ইত্যাদিতে করা যায়। অনেকেই এই পূজার বিধি সঠিক ভাবে পালন করে না। এই বিধি না জেনে থাকলে আজকের লেখা পড়ে নিশ্চয়ই জানতে পারবে।

>  যে দেবতা বা দেবীর পূজা করতে হয়, সেই দেবতার বা দেবীর পরিচয় সম্পর্কে আগে জেনে নিতে হয়। লক্ষ্মীদেবীকে আমরা ধনদৌলত, টাকা পয়সার দেবী হিসেবে জানি। আসলে লক্ষ্মীর পরিচয় শুধু ঐ টুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। লক্ষ্মী শুধু ধনই দান করেন না, তিনি জ্ঞান ও সচ্চরিত্রও দান করেন। এক কথায় লক্ষ্মীপূজা করলে, মানুষ সার্বিক ভাবে সুন্দর ও চরিত্রবান হয়।

>  স্বামী প্রমেয়ানন্দ বলেছেন, ‘কেবল টাকা- কড়িই ধন নয়। চরিত্রধন মানুষের মহাধন। যার টাকা-কড়ি নেই সে যেমন লক্ষ্মীহীন, যার চরিত্রধন নেই সে তেমনি লক্ষ্মীছাড়া। যাঁরা সাধক তাঁরা লক্ষ্মীর আরাধনা করেন মুক্তিধন লাভের জন্য।’ 

>  লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা কেনো জানা আবশ্যক।  কেউ কেউ বলেন, এটি বিষ্ণুর বাহন গরুড়ের পরিবর্তিত রূপ। মা লক্ষ্মী আসলে তাঁর স্বামীর
বাহনটিই ব্যবহার করেন। কিন্তু এই রূপ পেঁচার কেনী? লক্ষ্মীর দেওয়া ধন যারা অপব্যবহার করে, তাদের কপালে লেখা আছে যমের দণ্ড—এই কথা ঘোষণা করে লক্ষ্মীর বাহন। তাই কথায় বলে, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’। তাছাড়া ধনসম্পত্তি, সে টাকা-কড়ি হোক বা সাধন ধনই হোক, সদাজাগ্রত অবস্থায় রক্ষা করতে হয়। রাতে সবাই যখন ঘুমায়, তখন পেঁচা জেগে থাকে। পেঁচাই সেই ধনসম্পদ পাহারা দেয়। 

>  এবার জেনে নেই বেশ কিছু নিয়ম যা আমাদের মা লক্ষী পুজোর জন্য অত্যন্ত জরুরি।
**

:>নিয়মাবলী:-
*
>  লক্ষ্মীপূজায় ঘণ্টা বাঁজাতে নেই। লক্ষ্মীকে তুলসীপাতা দিতে নেই। কিন্তু লক্ষ্মীপূজার পর একটি ফুল ও দুটি তুলসীপাতা দিয়ে নারায়ণকে পূজা করতে হয়। লক্ষ্মীপূজা সাধারণত সন্ধ্যাবেলা করে, তবে অনেকে সকালেও করে থাকেন। সকালে করলে সকাল ন-টার মধ্যে করে নেওয়াই ভাল। পূজার পর ব্রতকথা পাঠ করতে হয়। লক্ষ্মীপূজায় লোহা বা স্টিলের বাসন-কোসন ব্যবহার করবে না। লোহা দিয়ে অলক্ষ্মী পূজা হয়। তাই লোহা দেখলে লক্ষ্মী সে গৃহ ত্যাগ করে চলে যান। যার যে প্রতিমায় পূজা করার নিয়ম সে সেই নিয়মেই পূজা করবে। পূজার পূর্বে পূজাস্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ধূপ দীপ জ্বালিয়ে দেবে। পূজাস্থানে লক্ষ্মীর পা-সহ আলপনা আঁকবে। ঘটের পাশে একটি লক্ষ্মীর পা অবশ্যই আঁকবে। পূজার সময় অন্য মনস্ক হবে না। মনকে লক্ষ্মীতে স্থির রাখবে। 
**

:> মা লক্ষী দেবীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য:-
*
>  মা লক্ষ্মীর চারটি হাত। ধর্ম, কর্ম, অর্থ ও মোক্ষ— হিন্দুশাস্ত্রে এই চার হাতের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবেই। যাঁরা মনে করেন মা লক্ষ্মী শুধুমাত্র ধনের দেবী, তাঁরা সম্ভবত দেবীর এই ব্যাখ্যা সম্পর্কে অবহিত নন। সমুদ্রমন্থন থেকে উদ্ভব মা লক্ষ্মীর। কিন্তু সবার আগে জানা প্রয়োজন তিনি কে? কীভাবে আবির্ভূত হলেন তিনি। এই নিয়ে নানা মত রয়েছে। কখনও বলা হয় তিনি ছিলেন ঋষি ভৃগুর সন্তান এবং সমুদ্রমন্থনে তাঁর পুনর্জন্ম হয়। আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী, তিনি সমুদ্রদেব বরুণের কন্যা। মা লক্ষ্মীরও আগে আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী সরস্বতী। একটি পৌরাণিক গল্পে বলা হয়েছে, ব্রহ্মার সাত সন্তান, সপ্তঋষির মধ্যে ৬ জনই দেবী সরস্বতীর আরাধনা করে দৈবজ্ঞান লাভ করেন। কিন্তু প্রশ্ন তোলেন মহর্ষি ভৃগু। মানবশরীরের ক্ষুধা নিবারণ কীভাবে ঘটে, সেই খোঁজে তিনি বেরিয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত উত্তরটি পান সমুদ্রদেব বরুণের কাছে। মহর্ষি ভৃগু তার পরেই উপলব্ধি করেন যে, মগজের বা মননের পুষ্টিলাভ যেমন হয় দেবী সরস্বতীর আরাধনায় তেমনই নশ্বর শরীরের পুষ্টির জন্য মা লক্ষ্মীর আবাহন ও পূজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মা লক্ষ্মীকে শুধুমাত্র ধনদেবী হিসেবে দেখলে তাঁর মহিমার সম্পূর্ণটা দেখা হয় না। তাঁর আশীর্বাদ মানুষের ক্ষুধা নিবারণের জন্য, গৃহস্থের সার্বিক কল্যাণের জন্য। আর এই দুয়ের জন্যই প্রয়োজন অর্থের। কিন্তু সেই অর্থ পাওয়ার পরে মানুষ তার প্রয়োগ কীভাবে করছে, সেদিকে তাঁর কড়া নজর। অপচয় বা অন্যায় প্রয়োগ তিনি সইতে পারেন না, তাই তিনি চঞ্চলা।
**

:> পুজোর আগে কিছু সাধারণ নিয়ম:-
*
>  সাধারণত কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে সারা রাত জেগে থাকার বিধি আছে। এই পূজার সঙ্গে কৃষকদের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে। তাই শোনা যায় সারারাত জেগে তারা ওইদিন শস্য পাহারা দেয়। সঙ্গে মার কাছে আশীর্বাদ চেয়ে নেওয়া হয়। আবার অনেকে মনে করেন, লক্ষ্মী দেবী চঞ্চলা তাই সারারাত জেগে তাকে পাহারা দেওয়া হয়, যাতে তিনি পালিয়ে না যান। এই কথা মা ঠাকুমাদের মুখে প্রায়ই শোনা যায়। লক্ষ্মীদেবী ধনসম্পদ তাকেই দেন, যে তার পুরো মর্যাদা দেয়। যে সেই ধনসম্পদ সমাজের কল্যাণে কাজে লাগায়। তাই লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা অত্যন্ত শুদ্ধ মনে করতে হয়। মা লক্ষ্মী অল্পেই খুশী হন। তাই এই পূজায় খুব একটা বাহুল্য নেই। যে যার সাধ্যমতো পূজা করে। তবে পূজার আগে পূজার স্থান একদম পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর সুন্দর করে আলপনা দিতে হবে। প্রতি ঘরের দরজায়, পূজার স্থানে লক্ষ্মীর পা অবশ্যই আঁকবে। সেইদিন আলপনা মুছবে না। তারপর পূজার জায়গা সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে, ধূপ, ধুনো, প্রদীপ জ্বালিয়ে দিতে হয়।
**

:> পুজো শুরু করার নিয়ম:-
*
>  সব আয়োজন পূর্ণ এবার পূজা শুরু। শুরুর আগে গঙ্গা জল ছিটিয়ে দিতে হবে নিজের ও সকলের মাথায় ও পূজার স্থানে। তারপর ভগবান নারায়ণকে মনে মনে স্মরণ করে পূজা শুরু করবে। পূজার স্থানে একটি তামার পাত্রে জল রাখবে। এই জল সূর্য দেবতাকে অর্পণ করার জন্য। তিনি সকল শক্তির উৎস। তাঁকে ছাড়া পৃথিবী অন্ধকার। তাই তাঁকে জল দেওয়া বাঞ্ছনীয়। তামার পাত্রে জল ঢালতে ঢালতেই সূর্যদেবতাকে স্মরণ করুবে। এরপর ঘট স্থাপনের পালা। মাটির একটি গোল ডেলা মত করে নিন, সমান করে নিতে হবে। তার ওপর ঘট বসাবে। এবং ঘটের সামনে একটু ধান ছড়িয়ে দিববে। ঘটে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকবে সিঁদুর দিয়ে। ঘটের ওপর আমের পাতা রাখববে। পাতার সংখ্যা যেনো বিজোড় হয়। আর পাতার ওপর তেল ও সিঁদুরের ফোঁটা দেবে। ঘটে গঙ্গাজল দিয়ে তার ওপর আমের পাতা রাখবে। পাতার ওপর একটা হরিতকী, ফুল, দুব্বো, সব দিয়ে ঘট সাজাবে।
**

:> মা লক্ষী দেবীর আহবান:-
*
>  ঘট স্থাপনের পর মাকে প্রণাম করার পালা। ধ্যান মন্ত্রে মা কে প্রণাম করতে হবে। লক্ষ্মী পাঁচালীর বইয়ে এই মন্ত্র পাবে। এই বই যেকোনো দশকর্মার দোকানে পেয়ে যাবে। তবে এই মন্ত্র উচ্চারন একটু শক্ত। তাই যদি সঠিক উচ্চারন করতে না পারা যায়, তাহলে মাকে মনে মনে স্মরণ করে প্রণাম জানাবে। মাকে প্রণাম করে এবার আহবান জানাতে হবে। আহবান মন্ত্রও বইয়ে দেওয়া থাকে। না জানলে মাকে মনে মনে আহবান জানাতে হবে। হাত নমস্কার করে চোখ বন্ধ করে, বলতে হবে, "এসো মা আমার গৃহে প্রবেশ করো। আমার গৃহে অধিষ্ঠান করো। আমার এই সামান্য আয়োজন, নৈবিদ্য গ্রহণ করো মা।"

>  এইভাবে মাকে আহবান জানাবে। মা যখন ঘরে প্রবেশ করছেন, তাই তখন. মায়ের পা ধুয়ে দিতে হবে। মায়ের আঁকা পায়ে জলের ছিটা দিববে। তারপর ঘটে আতপ চাল, দুব্বো, ফুল ও চন্দন দিববে। এরপর একে একে দেবীকে সব অর্পণ করবে। ফল,মিষ্টি যা কিছু আয়োজন হয়েছে। তারপর ধূপ ধুনো দিববে। অর্পণ করার পর এবার পুষ্পাঞ্জলি। হাতে ফুল নিয়ে পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র তিনবার উচ্চারন করবে। তারপর দেবীর বাহনকে ফুল দিতে হবে। এবং নারায়নকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিববে। ও দেবতা ইন্দ্র ও কুবেরকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিবে। তারপর দেবীকে প্রণাম করতে হবে। এরপর সবশেষে লক্ষ্মীদেবীর পাঁচালী পড়ে পূজা শেষ করবে।

>  তবে কয়েকটি কথা মাথায় রাখতে হবে। লক্ষ্মীদেবীর পূজায় কাঁসর ঘণ্টা এসব বাঁজাবে না। এগুলিতে দেবী অসন্তুষ্ট হন। শুধু শাঁখ বাঁজাবে আর দেবীর ঘটে তুলসী পাতা দেবে না। আর দেবে না লোহার বাসনা। ব্যাস এই কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে শুদ্ধ মনে শুরু করে দিন পূজা। হোকনা আয়োজন সামান্য শুধু মন শুদ্ধ থাকলেই দেবী আসবেন ঘরে।
**

:> মা লক্ষীদেবীর প্রচলিত কিছু আচার অনুষ্ঠানের ধরণ ও পন্থা:-
*
>  প্রতিদিন স্নান করে শুদ্ধ হয়ে লক্ষ্মী গায়ত্রী মন্ত্র ১০৮ বার জপ করলে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন মা লক্ষ্মী। এই মন্ত্র জপ করার সময় পদ্মবীজের মালা ব্যবহার করলে ভাল। দক্ষিণাবর্ত শঙ্খকে বলা হয় মা লক্ষ্মীর শঙ্খ। লাল, সাদা বা হলুদ রংয়ের একটি পরিষ্কার কাপড়, একটি রুপোর পাত্র অথবা মাটির পাত্রের উপর রাখতে হয় এই শঙ্খ। এই শঙ্খের মধ্য দিয়েই মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ প্রবাহিত হয় বাসস্থানে। বলা হয় সমস্ত দেবতা বাস করেন তুলসি বৃক্ষে আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী দেবী তুলসি হলেন মা লক্ষ্মীরই এক রূপ। তাই বাড়িতে তুলসি বৃক্ষ থাকলে এবং সেখানে প্রতিদিন প্রদীপ জ্বাললে তুষ্ট হন মা লক্ষ্মী। ধারাবাহিকভাবে ১২ দিন ধরে সম্পূর্ণ ভক্তিভরে লক্ষ্মী দ্বাদশ স্তোত্র ১২ বার উচ্চারণ করলে, ঋণমুক্তি ঘটে। একটি বাঁশের বাঁশিকে সিল্কের কাপড়ে মুড়ে ঠাকুরের সিংহাসনে রাখলে মা লক্ষ্মী প্রসন্ন হন। কারণ বাঁশি হলো বিষ্ণুর অবতার শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়। তাই মা লক্ষ্মীরও অতি প্রিয়। শুধুমাত্র পুজোর দিনে নয়, প্রতিদিনই যদি দেবীর পায়ের চিহ্ন আঁকা হয়, তবে ভালো। প্রতিদিন না পারলে বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার এবং মা লক্ষ্মীর পুজোর তিথি থাকলে তো অবশ্যই। যিনি প্রতি শুক্রবার পরমান্ন বা মিষ্ট অন্ন দিয়ে গোসেবা করেন তাঁর প্রতি বিশেষ প্রসন্ন হন দেবী। প্রতি শুক্রবার পদ্মমূল থেকে তৈরি নয়টি সলতে দিয়ে একটি মাটির প্রদীপ মা লক্ষ্মীর পট বা প্রতিমার সামনে জ্বাললে তা গৃহে প্রাচুর্যের সমাহার ঘটায়। এছাড়া টানা ৩০ দিন ধরে মা লক্ষ্মীর প্রতিমা বা পটের সামনে নিষ্ঠাভরে শ্রী সুক্ত পাঠ করলে বিশেষ প্রসন্ন হন দেবী। শ্রী সুক্ত হলো ১৫টি ভার্সের একটি সম্মেলন। প্রতিদিন মা লক্ষ্মীর প্রতিমা বা পটের সামনে দু’টি ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালালে তা মঙ্গল। এর সঙ্গে পদ্ম, নারকেল ও ক্ষীরের নৈবেদ্য দিলে প্রসন্ন হন দেবী। ঠাকুরঘরে বা ঠাকুরের সিংহাসনে কড়ি এবং শঙ্খ রাখা খুবই শুভ গৃহের কল্যাণের জন্য। 
**

:> লক্ষী পুজোর যা কিছু করা নিষিদ্ধ:-
*
>  লক্ষ্মীপূজায় লোহা বা স্টিলের বাসনকোসন ব্যবহার করবে না। লোহা দিয়ে অলক্ষ্মী পূজা হয়। তাই লোহা দেখলে লক্ষ্মী গৃহ ত্যাগ করে যান। লক্ষ্মীপূজায় ঘণ্টা বাঁজাতে নেই। লক্ষ্মীকে তুলসীপাতা দিতে নেই। কিন্তু লক্ষ্মীপূজার পর একটি ফুল ও দুটি তুলসী পাতা দিয়ে নারায়ণকে পূজা করতে হয়। লক্ষ্মীপূজা সাধারণত সন্ধ্যাবেলা করে, তবে অনেকে সকালেও করে থাকেন। সকালে করলে সকাল ন-টার মধ্যেকরে নেওয়াই ভাল। পূজার পর ব্রতকথা পাঠ করতে হয়। 
**

:> শ্রীশ্রী মা লক্ষ্মীর স্তোত্র:-
*
লক্ষ্মীস্তং সর্বদেবানাং যথাসম্ভব নিত্যশঃ।
স্থিরাভাব তথা দেবী মম জন্মনি জন্মনি।।
বন্দে বিষ্ণু প্রিয়াং দেবী দারিদ্র্য দুঃখনাশিনী।
ক্ষীরোদ সম্ভবাং দেবীং বিষ্ণুবক্ষ বিলাসিনীঃ।।
**
:> শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর ধ্যান মন্ত্র:-
*
ওঁ পাশাক্ষমালিকাম্ভোজ সৃণিভির্যাম্য সৌম্যয়োঃ।
পদ্মাসনাস্থাং ধায়েচ্চ শ্রীয়ং ত্রৈলোক্য মাতরং।।
গৌরবর্ণাং স্বরূপাঞ্চ সর্বালঙ্কারভূষি তাম্।
রৌক্নোপদ্মব্যগ্রকরাং বরদাং দক্ষিণেন তু।।
**

:> শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর স্তোত্রম্:-
*
ত্রৈলোক্য পূজিতে দেবী কমলে বিষ্ণুবল্লভে।
যথাস্তং সুস্থিরা কৃষ্ণে তথা ভবময়ি স্থিরা।।
ঈশ্বরী কমলা লক্ষ্মীশ্চলা ভূতি হরিপ্রিয়া।
পদ্মা পদ্মালয়া সম্পদ সৃষ্টি শ্রীপদ্মধারিণী।।
দ্বাদশৈতানি নামানি লক্ষ্মীং সম্পূজ্য যঃ পঠেত।
স্থিরা লক্ষ্মীর্ভবেৎ তস্য পুত্রদারারদিভিংসহ।।
**

:> বিশেষ দ্রষ্টব্য:-
*
>  অবশ্যই তিন বার পাঠ করতে হবে শ্রীশ্রী লক্ষ্মীর পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র,
"নমস্তে সর্বদেবানাং বরদাসি হরিপ্রিয়ে।
 যা গতিস্তং প্রপন্নানাং সা মে ভূয়াত্বদর্চবাৎ।।"
°°

:> শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর প্রণাম মন্ত্র:-
°
ওঁ বিশ্বরূপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে।
সর্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।"
**

:> শেষের কথা:-
*
>  যেকোনো পুজোয় হোক না কেনো সব পুজোতে পুজোর একটা রীতি নীতি বা আচার অনুষ্ঠান থাকে ভিন্ন ভিন্ন। আর থাকে ভিবিন্ন রকমের মন্ত্র ও নিয়ম। আমাদের সেই মন্ত্র সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে পালন অর্থাৎ উচ্চারণ করে বলাটাই হলো একটু জটিল কাজ। প্রত্যেক দেবদেবীর একটা নিজস্ব কিছু রীতি নীতি মন্ত্র ইত্যাদি থাকে। পুজোর সময় সঠিক ভাবে পুজো করাটাও একটা মহৎ কাজ। মা লক্ষীর পুজোতে পুজোর মন্ত্র পড়ে সুষ্ঠ ভাবে করতে হয় বা করা উচিত। তেমনি সকল প্রকার দেবদেবীর পুজোও আমাদের বিধাতার রীতি নীতি মেনে চলাই হলো একমাত্র প্রধান কাজ। আমাদের হিন্দু শাস্ত্র মতে অনেক দেবদেবীর পুজো আমরা করে থাকি। আমরা প্রত্যেক দেবদেবীর পুজো করে থাকি ভগবানের আশীর্বাদ পাবার জন্য। প্রত্যেক ভগবানের অর্থাৎ প্রত্যেক দেবদেবীর আলাদা আলাদা আশীর্বাদের জন্যই আমরা পুজো করে থাকি। তাদের মধ্যে মা লক্ষী হলেন আমাদের ধন, সম্পদ, ঐশর্য, সুখ, শান্তি, ইত্যাদি আশীর্বাদের আশায়।

Monday, November 9, 2020

ডুয়ার্স


পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্সে ৩-৪ দিনের সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের জন্য কেউ কিভাবে পরিকল্পনা করবে?

পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্সে ৩-৪ দিনের সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের জন্য কেউ কিভাবে পরিকল্পনা করবে?


ডুয়ার্স ভ্রমণ গাইড, খরচ, দর্শনীয় স্থান
লাটাগুড়ি

সেই লাটাগুড়ি আর নেই। সেই আটপৌরে, ঢিলেঢালা জনপদটি এখন টানটান, স্মার্ট। থাকার অঢেল ব্যবস্থার মধ্যে এখানে এখন ফাউ হিসেবে পাবেন উত্তরের ভূমিপুত্রদের বুকভরা আতিথেয়তা। পছন্দের আস্তানা বেছে নিয়ে লাটাগুড়িকে কেন্দ্রে রেখে ডুয়ার্স ঢুঁড়ে দেখা এখন অনেক সোজা। আর সেটা বুদ্ধিমানের কাজও বটে। উত্তরের প্রকৃতি বোধহয় মায়ের আগমন ধ্বনি শুনতে পায়। শরৎকালের ডুয়ার্স অসামান্য রূপসী। নিশ্চিতভাবে অন্য সব ঋতুর চেয়ে সুন্দরী। ওপারে গাঢ় নীল রঙা আকাশ। নিচে নীল পাহাড়কে পেছনে রেখে আদিগন্তে সাদায় সাদা কাশফুল বাঁকের মুখে তন্বী পাহাড়ি নদীর চড়ায় সুখের হাওয়ায় দুলছে। দূরের কাঞ্চনজঙ্ঘা বড্ড ঝলমলে এই সময়। ধ্রুপদী মাধুর্যের অপরূপ বিভঙ্গে মাত করে দিচ্ছে সে। ডাইনে বাঁয়ে চোখ জুড়ানো চায়ের সবুজ। মেয়ে কুলিরা দলে দলে চা পাতা তুলতে ব্যস্ত। খয়ের, শাল, শিমুল, অমলতাস, টুন, চিলাউন, শিশু, গামার, সেগুন, সদ্য বর্ষার জলে স্নাত হয়ে চিরসবুজের পোশাক পরেছে। জঙ্গলে জঙ্গলে তাই বাহারি সবুজের বিস্তার।


চোখ জুড়ানো চায়ের সবুজ

ট্রেন বা সড়ক যে পথেই আসুন লাটাগুড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে বেলা হয়ে যাবে। গরুমারা, চাপড়ামারি, খুনিয়া, চুকচুকি, মেদলার গহীন অরণ্য দিনে দিনে দেখে নেওয়ার জন্য লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সংলগ্ন বন বিভাগের দপ্তর থেকে পাস নিতে হয়। ১৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে বৃহস্পতিবার বাদ দিয়ে সকাল ও বিকেলে অরণ্য সফর করানো হয়। যেদিন এলেন সেদিন হয়ত বনভ্রমণ সম্ভব হবে না, তাই আশপাশটা দেখে নিয়ে পরের দিন জঙ্গলমহলে যেতে পারেন। হাতে সময় থাকলে সেদিনই দেখে নিন জল্পেশ শিব মন্দির, দোমোহিনী, চিকনমাটি, খাগরিজান, কালামাটি কিংবা মহাকালধাম।

দ্বিতীয় দিন (গরুমারা)

গরুমারা দেখতে চলুন। লাটাগুড়ি থেকে মাত্র ১৪ কিমি। চেকপোস্ট থেকে অরণ্যপথে কিমি পাঁচেক গেলে বন বাংলো। কাঠোর এই বাংলো থেকে ইনডং নদী ও আশপাশের জঙ্গল অসাধারণ লাগে। বন বাংলোর পাশেই রাইনো পয়েন্ট, গন্ডার দেখার নজরমিনার। ৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩০০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির সরীসৃপ আর ৩০ রকমের উভচর নিয়ে ৮০ বর্গ কিমি ব্যাপ্ত গরুমারা অভয়ারণ্য। ১৯৭৬ সালে অভয়ারণ্য ও ১৯৮০-তে জাতীয় অরণ্যের শিরোপা পেয়েছে এই বনাঞ্চল। জঙ্গলের ভেতরে আরও দেড় কিমি গভীরে যাত্রাপ্রসাদ নজরমিনার। ১৯৭১ সালে আসাম থেকে আনা এক হাতির স্মৃতিতে নজরমিনারের নাম দেওয়া হয়েছে। নিজের জীবন বিপন্ন করেও যাত্রাপ্রসাদ কিছু পর্যটকের জীবন বাঁচিয়েছিল। পাশের মূর্তি নদীর ওপারে জঙ্গল। এখান থেকে গণ্ডার, বাইসন না দেখাটাই আশ্চর্যের। কাছেই চুকচুকি নজরমিনার ও নিচে ‘সল্টলিক’। এখানে নুন চাখতে আসে নানা জানোয়ার। সামনের জলাভূমিতে শীতে ভিড় করে যাযাবর পাখিকূল। এ বনে শাল, সেগুনের সজাগ উপস্থিতি। আছে জিগা, তুন, খয়ের, শিশুর মতো আঞ্চলিক বনজের দলও। গরুমারার গা ঘেঁষা রামসাই চা-বাগান লাগোয়া কালীপুর ইকো ভিলেজ রিসর্ট। পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। কটেজের চারপাশে বিদ্যুতের বেড়া। অসাধারণ নৈসর্গ।


নজরমিনার

তৃতীয় দিন (চাপড়ামারি-ঝালং-বিন্দু) ডুয়ার্সের দর্শনীয় স্থান

ভোরে চটপট প্রস্তুত হয়ে পারমিট হাতে নিয়ে মহাকালধাম। গরুমারার দিকে না গিয়ে বাতাবাড়ি মোড় থেকে ডানদিক ধরুন। লক্ষ্য চাপড়ামারি। কিছুটা যেতেই হালকা জঙ্গল শুরু হবে। একটু বাদেই চোখে পড়বে স্বচ্ছ জলের মূর্তি নদীর গা ঘেঁষে রয়েছে দারুণ সুন্দর এক বন বাংলো। পরিবেশ ও বাংলো দেখে থাকতে ইচ্ছে হতেই পারে। মূর্তি বাংলোর অপার্থিবতা পেরিয়ে ৮ কিমি গেলে খুনিয়া মোড়। সে মোড় ছাড়াতে আবার শাল, সেগুনের নজরদারি। আরও এগিয়ে বাঁহাতি সরু রাস্তা চলে গেছে চাপড়ামারি বন বাংলো ও নজরমিনারের দিকে। জঙ্গল এখানে ঘন সবুজ। সূর্যের আলোও সেভাবে প্রবেশ করতে পারে না। বাংলোর চারদিকে বৈদ্যুতিন তারের বেড়া। বন বাংলোর পেছনের দিকে বনকর্মীদের কোয়ার্টার। ৭৮ রকমের বন্যপ্রাণী আর বিস্তর ঘাসের আয়োজন রয়েছে এই ৯৪২ বর্গকিমির অরণ্যে। প্রায় ৮০ রকম ঘাসের মধ্যে বেশ কিছু বিরল প্রজাতির। নানা অর্কিড আর চোখ ধাঁধানো পাখির সমারোহে উজ্জ্বল এই বন্যভূমি হাতিদের দারুণ পছন্দের। তাই যে-কোনও সময় হাতি চলে আসতে পারে। গরুমারা থেকে চামড়ামারি ১২ কিমি।



চামড়ামারি বন বাংলো

চামড়ামারিকে পেছনে রেখে এবারে চলুন আরও উত্তরে ঝালং-এর দিকে। পথে পড়বে কুমাই, গৈরিবাস। চড়াই বাড়তে বাড়তে উচ্চতম হয়েছে গৈরিবাসে। নিচে ঝালং উপত্যকা। গৈরিবাস থেকে ঝালং ৬ কিমি। সবুজের মধ্যে সর্পিল গতির জলঢাকা নদী। জলঢাকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘিরেই ঝালং জনপদ। বিশেষ অনুমতি নিয়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেখে নিতে পারলে অনন্য অভিজ্ঞতার ভাগীদার হতে পারবেন। এখানকার বন উন্নয়ন নিগমের বাংলোতে না থাকাটা বোকামি। বাজার পেরিয়ে কিমি দশেক চড়াই ভাঙলে বিন্দু। গোটা পথ ধরে রয়েছে কমলালেবুর বাগান। বিন্দুতে জলঢাকা নদীর ওপরে একটা ব্যারেজ রয়েছে। ব্যারেজের পরেই ভুটানের শুরু। চলে গেছে ৬ কিমি দূরে ভুটানের তেন্ডু শহরে। ঝালং থেকে সামান্য গিয়ে রংবু নদীর সেতু পেরিয়ে যে দুটো পথ তার একটি বিন্দু গিয়েছে। অন্য পথে চলে যেতে পারেন প্যারন। প্যারনের উচ্চতা ২,৫৫০ ফুট। ঝালং থেকে ১০ কিমি। এখানে বন উন্নয়ন নিগমের বাংলো রয়েছে। বাংলোর পেছনে পাহাড়ি ঢালে শাল আর ধুপি গাছের জঙ্গল। প্যারন থেকে গোদক কিংবা তারও পরে আরও প্রত্যন্তের বোদে পর্যন্ত গিয়ে ট্রেক করে যাওয়া যেতে পারে তাংতা।

চতুর্থ দিন (চালসা-মেটেলি-সামসিং-রকি আইল্যান্ড-সুনতালেখোলা)

আজকের যাত্রা চালসার দিকে। লাটাগুড়ি থেকে ৩০ কিমি। চালসা পেরিয়েই সাপের মতো পাক খেয়ে রাস্তাটা একচোটে প্রায় কয়েকশ ফুট উঠে যাবে। অথচ, এর পরে সমতল। বাঁহাতে অভিজাত সিনক্লিয়ার্স ডুয়ার্স রিট্রিটকে রেখে আরও এগিয়ে গেলে আইভিল, চুলসা, কিলকট, ইংডংদের সঙ্গ পাবেন। ছটফটে কিশোরীর নামের মতো শোনালেও ওরা সবুজ কিছু চা-বাগান। দু’হাতেই। ছোট্ট জনপদ মেটেলির পথ বড় কাব্যময়। মেটেলি থেকে ৭ কিমি আর চালসা মোড় থেকে ১৮ কিমি দূরে সামসিং। নির্জন এক পাহাড়ি গ্রাম। নেপালি ও গোর্খাদের সংখ্যাধিক্য এখানে। সামসিং থেকে নেওড়া উপত্যকার গভীরে যাওয়া যেতে পারে। সবুজের মাঝে এখানকার বন বাংলোটি দারুণ সুন্দর। বাগানঘেরা। সামান্য দূরে পাথুরে এবড়ো-খেবড়ো পথে অ্যাডভেঞ্চার করতে করতে পৌঁছে যান রকি আইল্যান্ড। তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। সামসিং থেকে ৪ কিমি গিয়ে সুনতালেখোলা। তার আগে ছোট্ট গ্রাম ভারিয়া। খেলনার মতো ছোট্ট কাঠের ঝোলা ব্রিজে পাহাড়ি নদী পেরিয়ে ওপারে গেলে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়নি নিগমের অসাধারণ পর্যটক আবাস। চারিদেকে পাহাড়ঘেরা এ এক অদ্ভুত নির্জন জায়গা। আলাপ করার জন্য প্রকৃতি সব সময়ে হাজির। কাছাকাছি ছোটখাটো ট্রেক করার ব্যবস্থাও আছে।


স্বচ্ছ জলের টলটলে নদী

পঞ্চম দিন (জলদাপাড়া-ফুন্টসোলিং-টোটোপাড়া)

আজ চলুন জলদাপাড়া (মাদারিহাট) ও ফুন্টসোলিং ডুয়ার্সের দর্শনীয় স্থান। অরণ্যের ৭ কিমি গভীরে হলং পর্যটক আবাসটি এলিট। একদা ভি ভি আই পি-রা ভিড় জমাতেন। জ্যোতি বসুর অত্যন্ত প্রিয় ছিল একসময়। এখন বুকিং মেলে। মূল গেট পেরিয়ে সামান্য এগিয়ে ডানহাতে মিনিট চারেক হাঁটলে মাদারিহাট পর্যটক আবাস। টলটলে জলের মালঙ্গী নদীর কাঠের সেতু পেরিয়ে সামান্যই। প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, ছোট্ট চিড়িয়াখানা, অফিস, বনকর্মীদের আবাসন-সহ কাঠের বাংলো। একপাশে বর্গক্ষেত্রাকার মাঠ। মাঠের একধারে ছোট ছোট কটেজ। আশপাশে বন্য অরণ্য। এক শিং-এর গণ্ডারের জন্য খ্যাত জলদাপাড়ার গভীরে আরও অনেক প্রাণীর সঙ্গে দেখা হতে পারে। যখন-তখন উঁকি দেয় ময়ূর। পথ আটকে দাঁড়ায় ভয়াল দাঁতাল। গাছে গাছে দোল খায় বানর। পাখিরা কলতানে ভরিয়ে রাখে চারপাশ। বাংলোর হাতায় ‘হাতি পয়েন্ট’ থেকে হাতির হাওদায় চেপে বেড়িয়ে পড়া যায়। দেখা হয়ে যায় সম্বর, বুনো শুয়োর এবং নিমীলিত নেত্রের রাজকীয় গণ্ডারের সঙ্গে। মাদারিহাট থেকে আধঘন্টার দূরত্বে জয়গাঁ। দু’পাশে ঘন জঙ্গল রেখে ১০ কিমি গিয়ে তোর্সা ব্রিজ পেরোতেই হাসিমারা। তার পর আবার চা-বাগান। মাঝে মাঝে উঁকি দেয় সাদারঙা ফ্যাক্টরি, সাহেব-সাহেব বাংলো, কুলি বস্তি। ইচ্ছে করলে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়তে পারেন।


হলং বনবাংলো, জলদাপাড়া

জয়গাঁ বাসস্ট্যান্ড থেকে ২ কিমির মতো গিয়ে চিত্রবিচিত্র তোরণ পেরোলেই ভুটানের ফুন্টসোলিং। পাসপোর্টহীন, কাস্টমসের রক্তচক্ষু ছাড়া এ এক অদ্ভুত বিদেশ সফর। পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে ঝলমলে পোশাকের নানান ভুটানি। পুলিসরা সব নীলরঙা, বাড়িঘরের সজ্জায় বৌদ্ধিক স্থাপত্যের ছাপ। পরিবেশটাই অন্যরকম। রীতিমতো আধুনিক শহর ফুন্টসোলিং। ওয়েলকাম গ্রুপের অভিজাত ‘হোটেল ড্রুক’ ছাড়াও নানা মানের অসংখ্য হোটেল রয়েছে এখানে। রাজধানী থিম্পু বা পারো শহর যেতে এখান থেকেই যাত্রা শুরু করতে হয়। লাগোয়া জয়গাঁ (ভারত)-তেও থাকতে পারেন। ফুন্টসোলং ঢুকতেই ডানহাতে বাসস্ট্যান্ড, বাঁহাতে বাজার, পার্ক। পার্কের ঠিক মাঝখানে একটি সুন্দর প্যাগোডা। আশপাশে নানা দোকান। বাজার পেরিয়ে আরও কিছুটা গেলে তোর্সা নদী। এই সময় তেমন জল থাকার কথা নয়। রূপোলি বালি চিকচিক করবে। বাজারে না ঢুকে আরও কিছুটা এগোলে খাড়াই পথের শুরু। খারবন্দী পাহাড়কে পেঁচিয়ে রাস্তা গেছে থিম্পু। মসৃণ রাস্তা। কোথাও কোথাও সশব্দে ঝর্না নেমে এসে রাস্তা ডিঙিয়ে চলে গেছে আরও নিচে। এ পথে ৪ কিমি গেলে ১,৫০০ ফুট উচ্চতার গোয়াবাড়ি টিলা।


ফুন্টসোলিংয়ের গুম্ফা ও চোর্তেন

এখানে রয়েছে সুন্দর গুম্ফা। বুদ্ধদেবের প্রায় তিন মানুষ সমান উঁচু মূর্তিটি দারুণ সুন্দর। মন্দিরময় কারুকাজ। একটু নিচে ছোট ছোট কয়েকটি চোর্তেন। গুম্ফা লাগোয়া ছবির মতো সুন্দর রাজপ্রাসাদ। তাতে অবশ্য প্রবেশ নিষেধ। ছুটির দিন হলে নিচে নামার সময় দেখতে পাবেন ভুটানি যুবকেরা জাতীয় পোশাক পরে জাতীয় ক্রীড়া তীরন্দাজি অভ্যাস করছে। অব্যর্থ ওদের হাতের লক্ষ্য। লক্ষ্যভেদ হলে রীতিমতো নেচে নেচে গান করে স্বীকৃতি জানানো হয় তীরন্দাজকে। মাদারিহাট থেকে মাত্রই ২০ কিমি দূরে টোটোপাড়া। পৃথিবীর লুপ্তপ্রায় জনজাতির মধ্যে টোটোরাই জনসংখ্যায় সবচেয়ে কম। প্রায় হাজার দেড়েক ফুট উচ্চতার টোটোপাড়া আপনাকে বিরল অভিজ্ঞতার স্বাদ এনে দেবে সন্দেহ নেই। টোটো জনজাতির সংখ্যাবৃদ্ধিতে বদ্ধপরিকর সরকার নানা কর্মসূচী নিয়েছে। সুপারি গাছে ছাওয়া গ্রামে টোটোরা বাঁশে তৈরি খড়ের ঘরে থাকেন। ঘরগুলো মাচার ওপরে। টোটোপাড়ায় প্রচুর কমলালেবু পাওয়া যায়। বনজ আবহাওয়ার পাহাড়ি পরিবেশে একদিনের সফরে টোটোপাড়া এসে আপনার ভাল লাগবেই। মাদারিহাট থেকে ফালাকাটার দিকে ১০ কিমি গেলে খয়েরবাড়ি পর্যটন কেন্দ্র। ফালাকাটা থেকে ৫ কিমি দূরে কুঞ্জনগর ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র।

ব্যাকপ্যাক

যাওয়া– নানা ভাবে যাওয়া যেতে পারে লাটাগুড়ি। ১৩১৪৯ কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ধরে নিউ মাল জংশনে নামুন। ভাড়া : ১এ-২,২৫৫ টাকা, ২এ-১,৩৪০ টাকা, ৩এ-৯৩৫ টাকা ও স্লিপার- ৩৪০ টাকা। সেখান থেকে চালসা হয়ে লাটাগুড়ি আসতে বাস বা ভাড়া গাড়ি মিলবে। দূরত্ব ২৫ কিমি। ১৩১৪১ তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ও ১৫৯৫৯ কামরূপ এক্সপ্রেস ধরে নিউ ময়নাগুড়ি নেমেও এখানে আসা যায়। আবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সড়কপথে ১.৪৫ ঘন্টায় সরাসরিও চলে আসতে পারেন।

থাকা– লাটাগুড়িতে থাকার জন্য বেশ কিছু বেসরকারি ব্যবস্থা আছে। সরকারি পর্যটক আবাসে অন্যান্য জায়গায় থাকতে যোগাযোগ করুন: পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগম, কে বি ১৯, সেক্টর থ্রি, সল্ট লেক, গ্রাউন্ড ফ্লোর, কলকাতা ৭০০ ১০৬। ফোন ৭৬০৪০-৪৪৪৭৯,(০৩৩) ২২৩৫-০০৬৪ (বেলা ১০টা-বিকেল ৫টা)। ওয়েবসাইট:https://wbfdc.net/ বনবাংলোয় থাকতে লিখুন:ডি এফ ও, অরণ্য ভবন, ওল্ড কোর্ট ক্যাম্পাস, জুবিলি পার্ক, পোস্ট ও জেলা জলপাইগুড়ি, ফোন (০৩৫৬১) ২২০০১৭/২২৪৯০৭।

Sunday, November 8, 2020

গরুমারা


 পাহাড়, জঙ্গল, বণ্য প্রাণী, নদী, ঝরনা, চা-বাগান, শতাব্দীপ্রাচীন বনবাংলো এবং অতিথিবৎসল স্থানীয় মানুষজনের আন্তরিক ব্যবহার, সব মিলিয়ে ডুয়ার্স সম্পূর্ণ এক অন্য ভুবন। যার তুলনা মেলা ভার।



পশ্চিম ডুয়ার্স বেড়াতে হলে প্রথমে রেলপথে নিউ জলপাইগুড়ি জংশন স্টেশনে আসতে হবে। হাওড়া এবং শিয়ালদা স্টেশন থেকে প্রচুর ট্রেন রয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার।

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে শিলিগুড়ির মিত্তল বাসস্ট্যান্ডে গেলেই ডুয়ার্সের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার বাস পাওয়া যাবে। যাঁরা গাড়ি ভাড়া করে ডুয়ার্স বেড়াতে আগ্রহী, তাঁদের পক্ষেও শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করাই ভালো।



মংপং
পশ্চিম ডুয়ার্সের প্রথম পর্যটনকেন্দ্রটি হলো মংপং। শিলিগুড়ি শহর থেকে দূরত ২৯ কিলোমিটার।

শিলিগুড়ি থেকে মংপং যাওয়ার পথে পড়বে বিখ্যাত সেবকেশ্বরী কালীবাড়ি এবং কালীবাড়ির অদূরে অবস্থিত করোনেশন ব্রিজের ওপর দিয়ে তিস্তা নদী অতিক্রম করতে হবে।

তিস্তা নদী পার হওয়ার পর বেশ কিছুটা পথ ‘বানর কুলের নিয়ন্ত্রণে’ বললে ভুল বলা হবে না। এই পথে একটি সুন্দর ভিউ পয়েন্ট আছে- কিন্তু বানরদের অত্যাচার সহ্য করে কার সাধ্য ভিউ পয়েন্টে গিয়ে তিস্তা নদীর শোভা দেখা।

জনবিরল মংপংয়ে প্রকৃতিই প্রধান আকর্ষণ। ভোরের দিকে হাঁটতে হাঁটতে তিস্তা নদীর ধারে যেতে বেশ লাগবে। চোখে পড়বে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আর কানে আসবে তাদের বৃন্দগান।

কোথায় থাকবেন মংপংয়ে থাকার জন্য রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের চারটি কটেজ। সাধারণ কটেজের ভাড়া এক হাজার টাকা এবং বাতানুকূল ঘরের ভাড়া ১২৬০ টাকা। বাংলোর প্রাঙ্গণে গিয়ে দাঁড়ালে চোখে পড়ে তিস্তা নদীর পাহাড় থেকে নেমে সমতলে বয়ে চলা। বাংলোর অদূরেই রেললাইন চলে গিয়েছে শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার।

অগ্রিম ঘর বুকিংয়ের জন্য এ ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগম : ৬এ, রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার (৪র্থ তলা) কলকাতা-৭০০ ০১৩,  ২২৩৭-০০৬০/ ০০৬১।

মালবাজার
কলকাতার দিক থেকে মালবাজার যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ১৩১৪৯ কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে নিউমাল স্টেশনে পৌঁছে যাওয়া। এই ট্রেনটি প্রতিদিন রাত ৪টা ৩০ মিনিটে শিয়ালদা থেকে ছেড়ে পরদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিটে নিউ মাল স্টেশনে পৌঁছায়।

স্টেশন থেকে মালবাজার শহরের দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরবর্তী মালবাজার যাওয়ার জন্য বাসের অভাব নেই।

মহকুমা শহর মালবাজারের জমজমাট বাজার এলাকা ছাড়িয়ে বেরিয়ে এলেই চোখে পড়বে চা-বাগানের অপরূপ বিস্তার আর দূরের পাহাড়। মালবাজারের প্রধান আকর্ষণ হলো মাল উদ্যান।

অনেকটা জায়গা নিয়ে বনদপ্তরের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এই উদ্যান। এখানে চোখে পড়বে বেশ কিছু বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ এবং ফুলগাছ। যাঁদের বাগানের শখ আছে তাঁরা এখান থেকে ছোট ছোট টবে বসানো বিভিন্ন ধরনের ফুলগাছের চারাও কিনতে পারেন।

কোথায় থাকবেন
মালবাজারে রাত্রিবাসের জন্য রয়েছে রাজ্য পর্যটন দপ্তরের ট্যুরিস্ট লজ। লজের ছাদে চেয়ার নিয়ে বসলে শুধু পাখি দেখেই সময় কেটে যাবে। কারণ লজের পাশেই রয়েছে বড় বড় গাছপালা আর চা-বাগান।

মালবাজার ট্যুরিস্ট লজের ভোজনশালাটির বেশ সুনাম আছে। মালবাজারের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই এখানে চলে আসেন ভালো খাবারের আকর্ষণে।
মালবাজার লজে দ্বিশয্যাবিশিষ্ট ঘরের ভাড়া শুরু হয়েছে ৫০০ টাকা থেকে।

গরুমারা জাতীয় উদ্যান
গরুমারা জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৯৮ বর্গকিলোমিটার হলেও এই অরণ্যের উদ্ভিদ এবং জীববৈচিত্র্য সত্যিই বিস্ময়কর। গরুমারার জঙ্গলে রয়েছে বুনো হাতি, গন্ডার, গাউর বা ভারতীয় বাইসন, চিতল, সম্বর, বার্কিং ডিয়ার, বুনো শুয়োর, বনবিড়াল, চিতাবাঘ, শিয়াল এবং বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ ও পাখি।

শিলিগুড়ি বা মালবাজার থেকে গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক দেখতে হলে প্রথমে লাটাগুড়ি শহরে আসতে হবে। শিলিগুড়ি থেকে লাটাগুড়ির দূরত ৮০ কিলোমিটার আর মালবাজার থেকে দূরত ২৫ কিলোমিটার।

এছাড়া রেলপথে নিউ ময়নাগুড়ি স্টেশনে নেমেও লাটাগুড়ি আসা যায়, দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার।

গরুমারা জঙ্গলে প্রবেশ করার জন্য ডে-ভিজিট পাস সংগ্রহ করতে হবে লাটাগুড়িতে অবস্থিত বনদপ্তরের নেচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার থেকে।

জঙ্গলে ঢোকার অনুমতি মেলে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৪টা, সকাল সাড়ে ৪টা থেকে বেলা সাড়ে ১০টা আর দুপুর ১টা থেকে বেলা ৩টা এবং বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা। ডে-ভিজিট পাস ইস্যু করা আরম্ভ হয় দিনে দুবার। সকালের শিফটের পাস দেওয়া হয় দিনে দুবার।

সকালের শিফটের পাস দেওয়া শুরু হয় ভোর সাড়ে ৫টা আর দুপুরের শিফটের পাস দেওয়া আরম্ভ হয় বেলা ১২টা থেকে। পাস সংগ্রহের সময় জঙ্গলে প্রবেশ করার জন্য মাথাপিছু অ্যান্ট্রি ফি, গাড়ির প্রবেশমূল্য এবং গাইডের ফি জমা দিতে হয়।

শুধু গরুমারাই নয়, ডে-ভিজিট পাস ইস্যু করা হয় চাপড়ামারির জঙ্গল এবং বেশ কয়েকটি ওয়াচটাওয়ারের জন্য। সমস্যা হলো প্রতি শিফটে মাত্র ২৫ জন পর্যটককে একেকটি জঙ্গল বা ওয়াচটাওয়ারে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

এর ফলে ভরা মরসুমে, বিশেষ করে পুজোর সময় ডে-ভিজিট পাস সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে বনভ্রমণ সুনিশ্চিত করতে বেশির ভাগ পর্যটক লাটাগুড়ি শহরে রাত্রিবাস করেন।

লাটাগুড়ি থেকে চালসার দিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার যাওয়ার পর পথের ডান দিকে চোখে পড়বে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের প্রবেশপথ। এখানেই চেকপোস্টে অনুমতিপত্র পরীক্ষা করে পর্যটকদের সঙ্গে একজন করে গাইড দেওয়া হয়।

চেকপোস্ট থেকে গরুমারা বনবাংলো-সংলগ্ন রাইনো পয়েন্ট প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। এই বনপথ ধরে যাওয়াটাই এক দারুণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। কপাল ভালো হলে এই পথেই দেখা হয়ে যেতে পারে একাধিক বন্যজন্তুর সঙ্গে।

বন্য প্রাণী দর্শনের জন্য রাইনো পয়েন্ট এবং কিছু দূরে অবস্থিত যাত্রাপ্রসাদ ওয়াচটাওয়ার বেশ ভালো জায়গা। আর কিছু না হোক, গন্ডার, বাইসন, বুনো শুয়োর, ময়ূর এবং একাধিক প্রজাতির হরিণের দর্শন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

লাটাগুড়িতে কোথায় থাকবেন  
লাটাগুড়িতে এখন হোটেলের ছড়াছড়ি। এদের মধ্যে কয়েকটির নাম নিচে দেওয়া হলো। ভরা পর্যটন মরসুমে বেশির ভাগ হোটেলের ভাড়াই ওঠানামা করে। হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে নেওয়াই ভালো। হোটেল গ্রিন লেগুন ( ২০৩১৭৭), হোটেল বনবিতান ( ৯৪৩৩৩-২১৯৫০, ৯৪৭৭১-৫২৬৬৪), রোজ ভ্যালি রিসর্ট ( ৯৮৩১৩-৯৯৯৮৮, ৯৮৩১৫-৯৯৯৮৮), পঞ্চবটী রিসর্টস ( ২৬৬২৮৪), হোটেল ডাইনেস্টি (৯৮৩০২-৬৪৭৯২), গ্রিন ভিউ হোটেল ( ২৬৬২৫৮), লেক ভিউ রিসর্ট।


Saturday, July 25, 2020

Shree Vakratunda Mahakaya

Shree Vakratunda Mahakaya

श्री वक्रतुण्ड महाकाय सूर्य कोटी समप्रभा।
निर्विघ्नं कुरु मे देव सर्व-कार्येशु सर्वदा॥

Shree Vakratunda Mahakaya Suryakoti Samaprabha।
Nirvighnam Kuru Me Deva Sarva-Kaaryeshu Sarvada॥

om namah shivaya lyrics

Om Namah Shivaya



Om Namah Shivaya Om Namah Shivaya Hara Hara Bole Namah Shivaya
Rameshwara Shiva Rameshwara Hara Hara Bole Namah Shivaya
Ganga Dhara Shiva Ganga Dhara Hara Hara Bole Namah Shivaya
Jatadhara Shiva Jatadhara Hara Hara Bole Namah Shivaya
Someshwara Shiva Someshwara Hara Hara Bole Namah Shivaya
Vishweshvara Shiva Vishweshvara Hara Hara Bole Namah Shivaya
Koteshwara Shiva Koteshwara Hara Hara Bole Namah Shivaya
Mahakaleshvara Hara Hara Bole Namah Shivaya

Saturday, July 11, 2020

chiken biriyani

রিয়ানি 
উপকরণঃ মুরগির মাংসের ৮ টি বড় টুকরো, বাসমতি চাল – ১ কেজি , গোলমরিচ – ৫ টি, টকদই – ১ কাপ , আদা, রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ করে , এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ধনে, জিরা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ করে , লংকা গুড়ো – ১ চা চামচ , পেঁয়াজ কুচি – ১ কাপ , টমেটো – ২ টি (টুকরো করা) , গরম মশলা গুড়ো  – ১ চা চামচ , বিরিয়ানি মশলা – ১ চা চামচ , গোলমরিচ গুড়ো – ১/২ চা চামচ , মেথি – ১/২ চা চামচ , লেবুর রস – ২ টেবিল চামচ , কাঁচালংকা – ৫ টি (কুচি) , পুদিনা পাতা কুচি – ১ টেবিল , ধনেপাতা কুচি – ২ টেবিল চামচ , দুধ – ১/২ কাপ (জাফরান মিশানো) , লবণ – পরিমাণমতো , তেল – ১ কাপ , ঘি – ৩ টেবিল চামচ।

প্রণালিঃ  চাল ১০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে আস্ত গরম মশলা ও লবণ দিয়ে সিদ্ধ করুন । মুরগির মাংস, টকদই, হলুদ, ধনে, জিরা গুড়ো, মরিচ গুড়ো, আদা, রসুন বাটা একত্রে মেখে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করুন । তেল গরম করে পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে টমেটো দিয়ে ভুনে নিন । এবার ম্যারিনেট করা মাংস দিয়ে কষিয়ে নিন । প্রায় সিদ্ধ হয়ে গেলে লেবুর রস, মেথি, গোলমরিচ গুড়ো, গরম মশলা গুড়ো, বিরিয়ানি মশলা দিয়ে আরো কিছুক্ষণ রান্না করুন । জল শুকিয়ে তেল ভেসে উঠলে নামিয়ে নিন । এবার একটি বড় পাত্রে প্রথমে রান্না করা মাংস, তার উপর সিদ্ধ চাল, কাঁচালঙ্কা, পুদিনা পাতা, ধনেপাতা কুচি দিয়ে পুনরায় এভাবে আরেকটি লেয়ার করে তার উপর দুধ, ঘি ও লবণ ছিটিয়ে দিয়ে ভালো করে ঢেকে ৩০ মিনিট পর  নামিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন ।

Friday, July 3, 2020

পশ্চিমবঙ্গের পরিচিত মাছগুলোর নাম চিত্রসহ জানাতে পারেন কি?

। রুই মাছ:

২। কাতলা মাছ

৩। ইলিশ মাছ

৪। ভেটকি মাছ

৫। গলদা চিংড়ি

৬। বাগদা চিংড়ি

৭। চাপড়া চিংড়ি

৮। কৈ মাছ

৯। তেলাপিয়া মাছ

১০। পুঁটি মাছ

১১। মৌরলা মাছ

১২। ট্যাংরা মাছ

১৩। পমফ্রেট মাছ

১৪। শিঙি মাছ

১৫। মাগুর মাছ

১৬। ভোলাভেটকি মাছ

১৭। বোয়াল মাছ

১৮। পাবদা মাছ

১৯। শোল মাছ

২০। শংকর মাছ

২১। বেলে মাছ

২২। কুঁচে মাছ

২৩। লৈট্যা মাছ

২৪। সরপুঁটি মাছ

২৫। মৃগেল মাছ

২৬। বাটা মাছ

২৭। পারশে মাছ

২৮। ফলি মাছ

২৯। চাঁদা মাছ

৩০। তোপসে মাছ

৩১। কাজলি মাছ

৩২। কাঁকিলা মাছ

৩৩। গুর্জারি মাছ

৩৪। চিতল মাছ

৩৫। পাঁকাল মাছ

৩৬। কালবোস মাছ

৩৭। বোরোলী মাছ

৩৮। মেনি মাছ বা ন্যাদোস মাছ

৩৯। খোলসে মাছ

৪০। পাংগাস মাছ

( ছবি গুগল থেকে সংগৃহীত )