Sunday, June 14, 2020

পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা পেঁয়াজ-রসুন আমিষ খাদ্য হিসাবে খান, যদিও ভারতবর্ষের অন্য রাজ্যের মানুষ পেঁয়াজ-রসুন নিরামিষ খাদ্য হিসাবে খান, আপনার কী মনে হয় পেঁয়াজ-রসুন আমিষ না নিরামিষ? আপনার যা মনে হয় তা মনে হওয়ার কারণ কী?

উত্তরটি দুটি দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা যাক।

  1. শাস্ত্রীয়
  2. বৈজ্ঞানিক

  • প্রথমেই আসি শাস্ত্রীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে।

হিন্দু শাস্ত্রমতে মানুষের আহার তিন ভাগে বিভক্ত।

  1. সাত্বিক
  2. রাজসিক
  3. তামসিক

সাত্ত্বিক আহার- যাহা আয়ু, উৎসাহ, বল, শক্তি, আরোগ্য, চিত্ত প্রসন্নতা ও রুচি এই সকল বর্ধনকারী এবং সরস, স্নেহযুক্ত, প্রীতিকর এবং সারবান (যে খাদ্য শক্তিকে দীর্ঘস্থায়ী করে রাখে)

রাজসিক আহার- অতি কটু, অতি অম্ল, অতি লবণাক্ত, অতি উষ্ণ, তীক্ষ্ণ এবং যা দুঃখ, রোগ ও শোক বৃদ্ধি কারক তা হল রাজসিক খাদ্য।

তামসিক আহার- যে খাদ্য অনেক অাগেই পক্ক, যাহার রস শুস্ক, দুর্গন্ধযুক্ত, বাসি খাবার, উচ্ছিষ্ট, ও অপবিত্র ইহাই তামসিক খাদ্য।

  • এখন আমরা নিরামিষ বলতে যা বুঝি তা হলো সাত্বিক আহার।
  • আমিষ বলতে যা বুঝি তা হলো রাজসিক আহার।
  • মাদক বা নেশাদ্রব্য গুলিকে সাধারণত তামসিক আহার বলা হয়ে থাকে।

সেই হিসেব মত পেয়াঁজ রসুনের মধ্যে রাজসিক আহারের গুণগুলি বর্তমান। আর তাই শাস্ত্রমতে পেয়াঁজ বা রসুনকে আমিষ বলে গণ্য করা হয়।


  • এবার আসি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে।

ইংরেজীর প্রোটিন শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো আমিষ।সুতরাং বলাই যায়, যে সমস্ত খাদ্যে প্রোটিন বর্তমান বা প্রোটিনের পরিমাণ তুলনা মূলক ভাবে যথেষ্ট বেশি, তাদেরকেই আমিষ বলা যেতে পারে।

সেই মত, দেখে নেওয়া যাক পেয়াজ রসুনে উপস্থিত খাদ্য উপাদান :

পেয়াঁজ:

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়াজ এ আমিষের মাত্রা ১.১ গ্রাম। যা তুলনামূলক ভাবে যথেষ্টই কম। তাই বৈজ্ঞানিকভাবে ভাবলে পেয়াজ কে আমিষ বলা বোধ হয় উচিত হবে না।

রসুন:

আবার রসুনের ক্ষেত্রে প্রতি প্রতি ১০০ গ্রাম রসুনে আমিষের মাত্রা ৬.৩৬ গ্রাম। যা যথেষ্টই বেশি। তাই রসুনকে আমিষ বলা চলে।


উত্তর তো পড়লেন। এবার আপনিই বিচার করে দেখুন কোন ভঙ্গি আপনার দৃষ্টির সাথে খাপ খায়

¯\_(ツ)_/¯


No comments:

Post a Comment