Friday, May 1, 2020

এক ব্রাহ্মণের- চার শত্রু

হরে কৃষ্ণ,
         👉এক ব্রাহ্মণের- চার শত্রু।।।।

একবার অর্জুনের মনে অহংকার হলো-যে তিনিই ভগবানের সবচেয়ে বড় ভক্ত। তাঁর মনের এমন ভাব শ্রীকৃষ্ণ বুঝতে পারলেন। তাই তিনি অর্জুনকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বেরোলেন।
পথে এক গরীব ব্রাহ্মণের সাথে তাদের সাক্ষাৎ হলো-
সেই ব্রাহ্মণের আচার-আচরণ এতই অদ্ভূত ছিল যে, তিনি শুকনো ঘাস খাচ্ছিলেন,অথচ কোমরে একটি তলোয়ারও ঝুলছিল।
অর্জুন তাকে জিজ্ঞাসা করলেন-
আপনি তো অহিংসার পূজারি। জীব হিংসার ভয়েই তো শুকনো ঘাস খেয়ে জীবনধারণ করছেন। তাহলে হিংসার উপকরনরূপে আবার আপনার কাছে তলোয়ার কেন?
ব্রাহ্মণের উত্তর--- কারন আমি কিছু মানুষকে দণ্ডদান করতে চাই।
আপনার আবার শত্রু কে আছে?
আমি এমন চারজনকে খুঁজছি,যাদের সাথে আমার অনেক হিসাব বাকি আছে।
সব থেকে প্রথমে আমি নারদকে ধরব।
সে আমার প্রভুকে একটু বিশ্রামও করতে দেয় না। সর্বদা ভজন-কীর্তন করে উনাকে জাগিয়ে রেখে দেয়।
এরপর ধরব দ্রৌপদিকে।
তাঁর উপর আমি অনেক ক্রুদ্ধ আছি। কারন সে আমার প্রভুকে এমন সময় ডেকেছিলেন,যখন ভগবান ভোজন করছিলেন।
দুর্বাশা মুনির অভিশাপ থেকে পাণ্ডবদের বাঁচাতে,তাই প্রভু খাবার ছেড়ে উঠে এসেছিলেন। আবার তার ধৃষ্টটা দেখ-সে আবার আমার ভগবানকে এঁটো খাবার পর্যন্ত খাইয়েছে।
আর তৃতীয় শত্রু কে?
সে হলো হৃদয়হীন প্রহ্লাদ।
সেই নির্দয়ী তো আমার প্রভুকে,নিজের সাথে গরম তেলের কড়াইয়ে প্রবেশ করিয়েছে। হাতির পায়ের তলায় ফেলিয়েছে। আর শেষে তো স্তম্ভ থেকেই প্রকট হতে বিবশ করে দিয়েছে।
আর চতুর্থ শত্রু হলো--- অর্জুন।
তাঁর ধৃষ্টতা দেখ- সে তো আমার ভগবানকে রথের সারথিই বানিয়ে ফেলেছে। ভগবানের অসুবিধা নিয়ে কি একটুও ভেবেছে সে?
কত কষ্ট দিয়েছে আমার প্রভুকে!
বলতে বলতে ব্রাহ্মণের চোখে জল চলে এল।
ব্রাহ্মণের প্রতিটি বাক্য শুনে,এবং তাঁর ভক্তির উচ্চতা দেখে আজ অর্জুনের অহংকার চূর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে গেল।
তিনি শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে বললেন-
বুঝে গেছি প্রভু, না জানি এই সংসারের কোনায় কোনায় কত ধরনের ভক্ত আছে আপনার। আর আমরা মিছেই নিজেকে ভক্ত হওয়ার গর্বে ফুলে-ফেঁপে উঠি। আজ আমি প্রমান পেয়ে গেলাম--
 তাদের তুলনায় আমি অতি নগন্য।

No comments:

Post a Comment